শনিবারও শিয়ালদা আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করল সঞ্জয় রায়। শিয়ালদা অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালতে ১২ মিনিটের শুনানিতে সিভিক ভলান্টিয়ারকে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছে। যদিও সঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। নিজের পক্ষে যুক্তি সাজিয়ে সঞ্জয় বলেছে, ‘আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। আমি যদি ধর্ষণ করি, তাহলে সেটা ছিঁড়ে গেল না কেন?’ যদিও শি🐈য়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে প্রমাণ আছে, সেটার ভিত্তিতে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ) ধারা, ৬৬ ধারা (ধর্ষণের এমন আঘাত করা, যে কারণে মৃত্যু হতে পারে) এবং ১০৩ (১) ধারায় (খুন) দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। শাস্তি ঘোষণা করা হতে পারে আগামী সোমবার।
ধর্ষণ-খুনের মামলায় ১টি চার্জশিট দাখিল সিবিআইয়ের
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পরদিনই সিভিক ভলান্টিয়াারকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৩ অগস্ট পুলিশের হাত থেকে আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ৭ অক্টোবর শিয়ালদা আদালতে চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে মূল অভিযুক্ত করে সেই চার্জশিট পেশ করা হয়। এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের তরফে ওই একটা চার্জশিট👍ই দাখিল করা হয়েছে। কোনও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করেনি।
৪ নভেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি- বিচারপ্রক্রিয়া ধর্ষণ-খুনের মামলার
তারইমধ্যে ৪ নভেম্বর শিয়ালদা আদালতে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ১১ নভেম্বর থেকে বিচ𝔍ারপ্রক্রিয়া শুরু হয় শিয়ালদা অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের আদালতে। ২১ ডিসেম্বর সঞ্জয়ের কথা শোনা যায়। জানুয়ারির শুরুতেই সঞ্জয়ের আইনজীবী দাবি করেন, সিভিক ভলান্টিয়ারকে ফাঁসানো হচ্ছে। বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে। পুরো ঘটনা পরে সাজꦦানো হতে পারে বলে দাবি করেন সঞ্জয়ের আইনজীবী। আর ৯ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়।
সন্দীপ-অভিজিতের জামিন ও ক্ষোভ
তারইমধ্যে আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। আর্থিক দুর্নীতির মামলায় ২ সেপ্টেম্বরই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তৎকালীন (তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার) প্রিন্সিপালকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বরে তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়। একই অভিযোগে সেদিন গ্রেফতার করা হয় টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণꦆ্ডলকে।
কিন্তু ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে ব্যর্থ হয় সিবিআই। সেই পরিস্থিতিতে ১৩ ডিসেম্বর দু'জনেই জামিন পেয়ে যান। তারপরই রোষের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রাস্তায় নামেন জুনিয়র ডাক্তাররা। উষ্মাপ্রকাশ করেন নির্যাতꦉিতা চিকিৎসকের বাবা-মা।
আরও অনেক অপরাধী আছে, বললেন বাবা-মা
সিবিআই তদন্ত𒀰ে অনাস্থা প্রকাশ করে ১৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। ৪ জানুয়ারি তাঁরা শিয়ালদা আদালতের বিচারককে ৫৭ পৃষ্ঠার বয়ান জমা দেন। তাঁরা দাবি করেন, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আরও অনেকে জড়িত আছে। যে দাবি তাঁরা আজও ক✤রেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যতদিন না প্রত্যেক অপরাধী সাজা পাচ্ছে, ততদিন ন্যায়বিচার মিলবে না।