𝓡 আরজি করের কর্তব্যরত চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনার ক্ষত আজও চাঙ্গা দেশবাসীর মনে। গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ইমারজেন্সি ভবনের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ। পাঁচ মাস ৯ দিনের মাথায় সেই মামলায় রায়দান করল শিয়ালদা আদালত। দোষী সাব্যস্ত করা হল সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। সর্বোচ্চ ফাঁসি, সর্বনিম্ন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন আরজি কর খুন ও ধর্ষণ মামলার একমাত্র দোষী সঞ্জয়।
💧এই রায়ের পর খুশি নয় নির্যাতিতার পরিবার। সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মৃতার বাবা-মা। আরজি কর খুন-ধর্ষণ মামলার রায় প্রকাশ্যে আসতেই শ্রীলেখা মিত্র ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘এটা বিচারের নামে প্রহসন’। আরজি কর আন্দোলনে শুরু থেকেই পথে নেমেছিলেন শ্রীলেখা। মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এই রায় নিয়ে অসন্তুষ্ট অভিনেত্রী।
🐻হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে ফোনের ওপার থেকে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি অসন্তুষ্ট তবে অবাক হইনি। কারণ জানতাম এমনটাই হবে, অন্যথা হবে না। রাজ্য আর দেশ দুটোই গোল্লায় গেছে। শুধু নেতা-মন্ত্রীদের দোষারোপ করে লাভ নেই। মানুষ নিজেরাই স্বার্থপরতা নিয়ে ব্যস্ত, ভয়-নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কনজিউমারিজমের যুগে আরও চাই, আরও চাই এই লোভ থেকেই তো সব ঘটছে’।
🃏খানিক থেমে অভিনেত্রী বলেলন, ‘আজ ওর (নির্যাতিতা চিকিৎসক তরুণী) বাবা বলছিলেন একজন গরীব অসুস্থ মানুষকে ভুল অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছিল, ওহ ভুলটা ধরেছিল। ওর সেই সাহসটা ছিল। এটা ইচ্ছে করে দৃষ্টান্তমূলক, দুই পক্ষের (কেন্দ্র ও রাজ্য) সরকারের তরফে করা হল। সিবিআই পারে না, এটা এমন কিছু বিরাট ব্যাপার নয়। এটা তো লোকাল পুলিশ করে দিতে পারত। ছোট্ট জায়গা, নাইট শিফটে ক’জন আছে এটা বের করা এমন কিছু রকেট সায়েন্স ছিল না। কিন্তু সিবিআইকে কিছু করতে দেওয়া হল না। কারণ মাঝে সমঝোতা হয়ে গেছে।'
💃সরকারের দিকে আঙুল তুলে শ্রীলেখা বলেলন, ‘এটা আমার বলার কথা নয়, সব মানুষ জানে। যাঁরা এই দলের সমর্থক তাঁরাও জানে’। আরজি কর ঘটনার পরেও থামেনি দেশে ধর্ষণের ঘটনা। মেয়ে আর মা হিসাবে কতটা চিন্তিত শ্রীলেখা? অভিনেত্রী বললেন, ‘ভয় লাগে। মেয়েদের পেপার স্প্রে, পকেট নাইট নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। মার্শাল আর্ট শিখতে হচ্ছে এই সব জন্তুদের জন্য। এটা দুর্ভাগ্যজনক। অপরাধীরা আসলে দেখতে পাচ্ছে, আমরা খুন করে, ধর্ষণ করে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছি। আমাদের উপরওয়ালা থাকলে টাকা খাইয়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছি, তাই ক্রিমিন্যালদের বাড়বাড়ন্ত।’
🎀আফসোসের সুরে অভিনেত্রী বললেন, 'সৎ মানুষ ভাবছে, সাহস দেখিয়ে তো মেয়েটাকে মরতে হল। তাহলে চলো মেনেনি, মানিয়েনি। আমরা তো জ্বলে উঠে ধপ করে নিভে গেলাম। তাহলে আমাদের মধ্যে সৎ সাহসের অভাব রয়েছে। আর এটা শুধু এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নয়, সব ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটছে। আমার ইন্ডাস্ট্রিতেও ঘটছে। লোকে বলছে- একে এক-ঘরে করে দাও, তাহলে এ মিউমিউ করে আমাদের বুলি আওড়াবে। আসলে কী জানেন তো সিস্টেমকে চেঞ্জ করতে গেলে আমাদের নিজেদেরকে বদলাতে হবে'।