HT Bangla Exclusive: 𓄧পাঁচ মাসের গর্ভাবস্থা। হঠাৎ করেই কোমর থেকে পা পর্যন্ত ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছিল। হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলছিলেন শ্রাবণী (নাম পরিবর্তিত)। এর পর নিয়ন্ত্রণ কমতে থাকে মলমূত্রের উপরেও। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে ধরা পড়ল বোন টিবি অর্থাৎ হাড়ের টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা। তাও আবার মেরুদণ্ডে। বোন টিবি-তে অনেকেই ভোগেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এই রোগ প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। কলকাতার সিএমআরই হাসপাতালে সম্প্রতি সেই রোগীর অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার করার পর আপাতত সুস্থ শ্রাবণী ও তাঁর গর্ভস্থ সন্তান।
যে যে চ্যালেঞ্জ
🐎অস্ত্রোপচার দলের প্রধান চিকিৎসক নিউরোসার্জেন রথীজিৎ মিত্র হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানালেন, ‘বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে সার্জারি করতে আমাদের। কারণ এই ধরনের সার্জারিতে মা ও শিশু দুজনেরই জীবনের ঝুঁকি থাকে। সার্জারির চ্যালেঞ্জের মধ্যে বড় চ্যালেঞ্জ গর্ভাবস্থা বলে বেশি রক্তক্ষরণ করা যাবে না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ থেকে রোগীমৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। বেশি এক্স রে-ও করার সুযোগও পাইনি। কারণ অতিরিক্ত এক্স রে করলে পেটের শিশুর সমস্যা হতে পারে।’
আরও পড়ুন - ♏HMPV সংক্রমণ এড়াতে কী করণীয় অ্যাজমা, COPD রোগীদের? HT বাংলায় পরামর্শ দিলেন ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ দেবরাজ যশ
রক্তক্ষরণ এড়াতে…
🐷রক্তক্ষরণ এড়াতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ‘টিবি সংক্রমিত হাড় কাটার জন্য এক্ষেত্রে বোন স্ক্যালপেল ব্যবহার করা হয়েছিল। আল্ট্রাসাউন্ডের সাহায্যে এই যন্ত্র কাজ করে। খুব কম রক্তক্ষরণ হয়। ইউরোপ, আমেরিকার মতো দেশেও খুব কম হাসপাতালে এই অত্যাধুনিক যন্ত্র রয়েছে। এই সার্জারিতে খুব বেশি হলে ২০০ মিলিলিটার রক্তক্ষরণ হয়েছে যা সাফল্যের বড় কারণ।’
বিশেষ কায়দায় অস্ত্রোপচার
ꦑঅস্ত্রোপচার করার সময়ও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়। গর্ভে সন্তান থাকায় উপুড় করে শুইয়ে অস্ত্রোপচার করা যায়নি। তবে নিউরোসার্জেন রথীজিৎ মিত্র ও সৌমিত্র রায়, অ্যানেস্থেসিস্ট সুবীর বসুঠাকুর ও দেবর্ষি রায়ের যৌথ দক্ষতায় পাশ ফিরে শুইয়েই সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা গিয়েছে।
আপাতত সুস্থ রোগিণী
🎐অস্ত্রোপচারের পর ঘা শুকোনো থেকে ব্যথা কমানো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। গর্ভবতী অবস্থায় একজন মহিলাকে ওষুধ দেওয়ার ব্যাপারে নানা নিষেধাজ্ঞা থাকে। এক্ষেত্রেও সেটা ছিল। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহেশ চৌধুরী ও সুজয় মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে থাকায় তিন-চারদিন পর থেকেই পায়ে সাড়া পেতে শুরু করেন শ্রাবণী। আপাতত ফিজিয়োথেরাপিস্টের সাহায্য নিয়ে হাঁটাচলার পর সুস্থ রয়েছে মা ও শিশু।