বাংলার বাড়ি যোজনার সমীক্ষা নিয়ে রাজ্যে ঝামেলা কম হয়নি। জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। অভিযোগ ছিল যোগ্যদের বঞ্চিত করে বাড়ি পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে ইতিমধ্যে যাদের বাড়ি রয়েছে তাদের। সেই অভিযোগ যে অমূলক নয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল হাতে নাতে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, বাংলার বাড়ি যোজনার এমন ১২ হাজার এমন উপভোক্তা রয়েছেন যারা টাকা পেলেও জমি না থাকায় বাড়ি করতে পারছেন না। কারণ তাদের জমি নেই। এই উপভোক্তাদের জমির ব্যবস্থা করে দিতে পঞ্চায়েত দফতরের তরফে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পৌঁছেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, বাংলার বাড়ি যোজনার অন্যতম শর্ত নিজের নামে জমি থাকতে হবে। জমি না থাকলেও কী করে যোজনার টাকা পেলেন তাঁরা। আর এখানেই উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ।যে ১২ হাজার উপভোক্তা প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছেন না তাদের জন্য জেলা শাসককে জমির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। যে যেখানে থাকেন তার কাছাকাছি খাস জমি চিহ্নিত করে সেখানে বাড়ি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে জমি না থাকলে বাংলার বাড়ি যোজনার জন্য কী করে যোগ্য বলে বিবেচিত হলেন সেই উপভোক্তা।বিরোধীদের দাবি, এটা একটা বিরাট দুর্নীতি। তৃণমূলের এমন বহু কেষ্ট - বিষ্টু বাংলার বাড়ি যোজনার টাকা পেয়েছেন যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে। এমনকী নতুন বাড়ি করার মতো কোনও জমিও নেই তাদের কাছে। আসেপাশে কারও মাটির বাড়িকে নিজের বাড়ি বলে দেখিয়ে তাদের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তারাই এখন বাড়ি করতে পারছেন না। এবার তৃণমূলের সেই সব খাস লোকের জন্য এবার টাকার সঙ্গে জমিরও ব্যবস্থা করতে চলেছে রাজ্য সরকার।যদিও পঞ্চায়েত মন্ত্রীর দাবি, এরা হতদরিদ্র মানুষ। এদের জমি নেই। তাই মানবিক মুখ্যমন্ত্রী এদের জন্য জমির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল যার জমি নেই তার জন্য তো রাজ্য সরকারের অন্য প্রকল্প রয়েছে। তাহলে তাকে আবাসের আওতায় আনা হচ্ছে কেন? এরকম সমস্ত জমিহীন হতদরিদ্র মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আবেদন করলে তাদেরও আবেদন মঞ্জুর হবে কি?